আওয়ামী লীগ সরকার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে গত দুই বছরে। দিল্লিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে দেশের পররাষ্ট্রনীতি। এ সময়ে পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্যই ছিল যে কোনো কিছুর বিনিময়ে দিল্লিকে তুষ্ট রাখা। আর এটা করতে গিয়ে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। প্রতিদানে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। বরং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় গত দুই বছরে সীমান্তে অনেক বেশি বাংলাদেশীর লাশ উপহার দিয়েছে ভারত। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ সময়ে বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছে ১৭০ নিরীহ বাংলাদেশী নারী-পুরুষ ও শিশু। আর গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ‘সীমান্তে আর কোন নিরীহ বাংলাদেশী হত্যা করা হবে না’ এই আশ্বাসের পরও এ পর্যন্ত প্রাণ দিয়েছে ৭৭ জন। এদিকে দিল্লিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির কারণে অন্য প্রতিবেশী দেশসহ বাকি বিশ্ব থেকে দিন দিনই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশীদের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। মুসলিম বিশ্ব থেকে অনেক দূরে সরে গেছে বাংলাদেশ। এর ফলে গত ২ বছরে সৌদি আরবসহ ২৫টি দেশে জনশক্তি রফতানি বন্ধ হয়েছে। চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র আস্থা রাখতে পারছে না বাংলাদেশের ওপর। পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বর্তমান সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট। যদিও প্রকাশ্যে তেমন কোনো সমালোচনা করছে না। বর্তমান সরকারের প্রতি পশ্চিমাদের এক প্রকার সমর্থন যে এখনও রয়েছে এটা তারই প্রমাণ। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এতসব ব্যর্থতার পরেও বিদেশ সফরে পিছিয়ে নেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিদেশ সফরের তিনি রীতিমত রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই বছরে ২১ বার বিদেশ সফর করেছেন। এসব সফরে বিদেশের মাটিতে তিনি কাটিয়েছেন ১০১ দিন। অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেকর্ডসংখ্যক ৬৮ বার বিদেশ সফর করেছেন। এই সফরে তিনি ২৬৬ দিন কাটিয়েছেন বিদেশের মাটিতে।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পররাষ্ট্রনীতিতে যে সবচেয়ে ব্যর্থ তার বড় প্রমাণ হলো সরকারের ২ বছর পূর্তিতে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ। প্রধানমন্ত্রী তার দীর্ঘ ভাষণে মাত্র সাড়ে ৫ লাইন বলেছেন পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে। পররাষ্ট্রনীতিতে সাফল্যের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে একটি শব্দও বলতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি শুধু বলেছেন, প্রতিবেশী দেশসহ সবার সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে পেরেছি। ভারতসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক, দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সাফল্য-ব্যর্থতা, মুসলিম ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একটি কথাও বলেননি প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শংকর রায় চৌধুরী এশিয়ান এজ পত্রিকায় এক নিবন্ধে বলেন, দিল্লির রাডারের বাইরে বাংলাদেশকে যেতে দিতে পারে না ভারত। জেনারেল শংকর রায় চৌধুরীর সেদিনের কথাটাই আজ সত্য। দিল্লির রাডারেই বাংলাদেশকে বন্দি করেছে বর্তমান সরকার।
ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ভারত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১০ সালের ১০-১৩ জানুয়ারি ১১৯ সদস্যের বিশাল এক বহর নিয়ে তিনি দিল্লি সফর করেন। গোটা বছর জুড়েই আলোচনার মূল বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর। ভারতের প্রত্যাশা পূরণে আর কিছু কি বাকি আছে? কি পেল বাংলাদেশ? আলোচনায় এসব প্রশ্ন এসেছে ঘুরে ফিরে। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচার করা হচ্ছিল, দিল্লি আস্থা ফিরে পেয়েছে ঢাকার ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে একতরফাভাবে দিল্লিকে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে ঢাকা।
ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী সন্ত্রাস দমন চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে সেভেন সিস্টারের বিদ্রোহ দমনে বাংলাদেশকে সহযোগী শক্তি হিসেবে পেয়েছে ভারত। দু’দেশের গোয়েন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি এক্ষেত্রে এখন কাজ করছে। গত এক বছরে প্রায় অর্ধশত উলফা নেতাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকে ট্রানজিটের জন্য মরিয়া ছিল ভারত। ভারতের সেই দাবিটিও পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার, আশুগঞ্জ বন্দরকে পোর্ট অব কল হিসেবে ব্যবহারসহ যা যা চেয়েছিল ভারত, তার সবকিছুই দিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। ট্রানজিট কার্যকর এবং বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণও উঠিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের হাতে। অন্যদিকে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি সমস্যার সমাধান, সীমান্ত চিহ্নিতকরণ, বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, ছিটমহল হস্তান্তর, সমুদ্রসীমা নির্ধারণসহ বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ব্যাপারে ভারতের কাছ থেকে মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। তবে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তির ব্যাপারে ভারত রাজি হয়েছে বলে গত সোমবার জেআরসি সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে। কিন্তু চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।
অতীতে প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুত্ খাতের কোনো কাজ পায়নি ভারত। বিনা টেন্ডারে ২৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের কাজ ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে আমাদের বিদ্যুত্ খাতের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।
আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ত্রিপুরায় ভারতের ওডিসি পরিবহনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি সই হয়েছে। ভারতের তৈরি করা চুক্তির খসড়াটিই অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ।
নৌ-ট্রানজিট ফি আদায়ের জন্য বিধিমালা তৈরি করে সার্কুলার জারি করে সরকার। ফিও আদায় শুরু হয়। হঠাত্ ভারত নৌ-ট্রানজিট ফি দিতে অস্বীকার করে। নৌ-ট্রানজিট ফি না দেয়ার ভারতের দাবি অপূর্ণ রাখেনি বাংলাদেশ। ওই সার্কুলার স্থগিত করে সরকার।
নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য অনুমতি চায় বাংলাদেশের কাছে। সেই অনুমতিও দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় যৌথ ইশতেহার ঘোষণার পর ভারতের বিখ্যাত দৈনিক ‘দ্য হিন্দুর সম্পাদকীয়তে বলা হয়, সুযোগ পেয়ে ঢাকার কাছ থেকে সবকিছু দু’হাতে লুফে নিয়েছে দিল্লি।’
বাংলাদেশের নতজানু নীতির কারণে ভারত একদিকে একতরফাভাবে তাদের সব দাবি একে একে বাংলাদেশের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে অন্যদিকে বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের আগ্রাসী তত্পরতা। সীমান্তে প্রতিনিয়ত নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যা করছে বিএসএফ। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, সীমান্তে আর কোনো নিরীহ বাংলাদেশী নিহত হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ওই আশ্বাসের পর এ পর্যন্ত মহিলা ও শিশুসহ ৭৭ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে গুলি করে মেরেছে বিএসএফ। আর এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারেনি সরকার। এই সরকারের আমলেই বাংলাদেশের জনগণকে টাউট বলার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সামনে এক ভারতীয় সাংবাদিক বাংলাদেশকে বাফার স্টেট বলার পর নীরব থেকেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছে গত দুই বছরে। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি। সমুদ্রসীমা নির্ধারণে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় মিয়ানমার তার সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি খারাপ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই দেশটি যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে তাদের অস্বস্তির কথা জানিয়েছে শুরুতেই। তবে বাংলাদেশ সরকারের একটি লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা। দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ওই বৈঠকের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো। তবে ফল হয়েছে তার উল্টো। বৈঠকে ’৭১-এর গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে রীতিমতো বেঁকে বসে পাকিস্তান। ২ দিনের ওই বৈঠক মাত্র ৩ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। পাকিস্তানের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের বৈঠকের যে কর্মসূচি ছিল তা বাতিল করে পাকিস্তান। ওই বৈঠকের পর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক অত্যন্ত নাজুক।
চীনের সঙ্গে একটি বিশেষ সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে কূটনীতিতে ভারসাম্য রক্ষার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল তাও সফল হয়নি। গত বছর জানুয়ারিতে ভারত সফরের পর প্রধানমন্ত্রী মার্চ মাসে চীন সফর করেন। ওই সফরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, সামরিক সহযোগিতাসহ যেসব ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল সেসব ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অগ্রগতি নেই। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীন বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য ঢাকার কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়েছে বেইজিং। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভারতপ্রীতির কারণে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে চীন। সব মিলিয়ে এক আস্থাহীনতার ওপর এসে দাঁড়িয়েছে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক।
সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। মুসলিম বিশ্ব থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে বাংলাদেশ। গত দুই বছরে সৌদি আরবসহ ২৫টি দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। জনশক্তি রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে বর্তমান সরকারের আমলে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নেপাল থেকে শ্রমিক নিলেও বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে না। সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে খোদ সরকার সমর্থক বায়রা নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন।
মানবাধিকার পরিস্থিতি, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমান সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট পশ্চিমা দেশগুলো। তবে প্রকাশ্যে তেমন কোনো সমালোচনা করছে না সরকারের। পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য ভারত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হওয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মুখ খুলছে না পশ্চিমারা। তবে এ অবস্থা কতদিন বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে সম্প্রতি যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে তা স্পষ্ট। কসোভোর স্বীকৃতি, টিফা চক্তি, চীনের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বর্তমান সরকারের অবস্থানে মোটেই সন্তুষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে এটা বিশ্ববাসীকে জানাতে সক্ষম হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দাতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় করাতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দাতারা।
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে ব্যর্থতার পরও সরকার এখন পর্যন্ত পশ্চিমা দেশগুলোকে প্রকাশ্য সমালোচনা করা থেকে বিরত রেখে তাদের সমর্থন ধরে রাখতে পেরেছে। এটাকে সরকার তাদের সাফল্য মনে করতেই পারে।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের সময় বিভিন্ন সরকার প্রধানের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে বসিয়েছেন, তার প্রশংসা করেছেন, দিল্লিতে বিপুল সংবর্ধনা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এই বা কম কি?
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পররাষ্ট্রনীতিতে যে সবচেয়ে ব্যর্থ তার বড় প্রমাণ হলো সরকারের ২ বছর পূর্তিতে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ। প্রধানমন্ত্রী তার দীর্ঘ ভাষণে মাত্র সাড়ে ৫ লাইন বলেছেন পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে। পররাষ্ট্রনীতিতে সাফল্যের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে একটি শব্দও বলতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি শুধু বলেছেন, প্রতিবেশী দেশসহ সবার সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে পেরেছি। ভারতসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক, দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সাফল্য-ব্যর্থতা, মুসলিম ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একটি কথাও বলেননি প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শংকর রায় চৌধুরী এশিয়ান এজ পত্রিকায় এক নিবন্ধে বলেন, দিল্লির রাডারের বাইরে বাংলাদেশকে যেতে দিতে পারে না ভারত। জেনারেল শংকর রায় চৌধুরীর সেদিনের কথাটাই আজ সত্য। দিল্লির রাডারেই বাংলাদেশকে বন্দি করেছে বর্তমান সরকার।
ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ভারত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১০ সালের ১০-১৩ জানুয়ারি ১১৯ সদস্যের বিশাল এক বহর নিয়ে তিনি দিল্লি সফর করেন। গোটা বছর জুড়েই আলোচনার মূল বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর। ভারতের প্রত্যাশা পূরণে আর কিছু কি বাকি আছে? কি পেল বাংলাদেশ? আলোচনায় এসব প্রশ্ন এসেছে ঘুরে ফিরে। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচার করা হচ্ছিল, দিল্লি আস্থা ফিরে পেয়েছে ঢাকার ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে একতরফাভাবে দিল্লিকে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে ঢাকা।
ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী সন্ত্রাস দমন চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে সেভেন সিস্টারের বিদ্রোহ দমনে বাংলাদেশকে সহযোগী শক্তি হিসেবে পেয়েছে ভারত। দু’দেশের গোয়েন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি এক্ষেত্রে এখন কাজ করছে। গত এক বছরে প্রায় অর্ধশত উলফা নেতাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকে ট্রানজিটের জন্য মরিয়া ছিল ভারত। ভারতের সেই দাবিটিও পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার, আশুগঞ্জ বন্দরকে পোর্ট অব কল হিসেবে ব্যবহারসহ যা যা চেয়েছিল ভারত, তার সবকিছুই দিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। ট্রানজিট কার্যকর এবং বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণও উঠিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের হাতে। অন্যদিকে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি সমস্যার সমাধান, সীমান্ত চিহ্নিতকরণ, বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, ছিটমহল হস্তান্তর, সমুদ্রসীমা নির্ধারণসহ বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ব্যাপারে ভারতের কাছ থেকে মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। তবে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তির ব্যাপারে ভারত রাজি হয়েছে বলে গত সোমবার জেআরসি সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে। কিন্তু চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।
অতীতে প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুত্ খাতের কোনো কাজ পায়নি ভারত। বিনা টেন্ডারে ২৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের কাজ ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে আমাদের বিদ্যুত্ খাতের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।
আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ত্রিপুরায় ভারতের ওডিসি পরিবহনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি সই হয়েছে। ভারতের তৈরি করা চুক্তির খসড়াটিই অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ।
নৌ-ট্রানজিট ফি আদায়ের জন্য বিধিমালা তৈরি করে সার্কুলার জারি করে সরকার। ফিও আদায় শুরু হয়। হঠাত্ ভারত নৌ-ট্রানজিট ফি দিতে অস্বীকার করে। নৌ-ট্রানজিট ফি না দেয়ার ভারতের দাবি অপূর্ণ রাখেনি বাংলাদেশ। ওই সার্কুলার স্থগিত করে সরকার।
নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য অনুমতি চায় বাংলাদেশের কাছে। সেই অনুমতিও দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় যৌথ ইশতেহার ঘোষণার পর ভারতের বিখ্যাত দৈনিক ‘দ্য হিন্দুর সম্পাদকীয়তে বলা হয়, সুযোগ পেয়ে ঢাকার কাছ থেকে সবকিছু দু’হাতে লুফে নিয়েছে দিল্লি।’
বাংলাদেশের নতজানু নীতির কারণে ভারত একদিকে একতরফাভাবে তাদের সব দাবি একে একে বাংলাদেশের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে অন্যদিকে বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের আগ্রাসী তত্পরতা। সীমান্তে প্রতিনিয়ত নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যা করছে বিএসএফ। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, সীমান্তে আর কোনো নিরীহ বাংলাদেশী নিহত হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ওই আশ্বাসের পর এ পর্যন্ত মহিলা ও শিশুসহ ৭৭ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে গুলি করে মেরেছে বিএসএফ। আর এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারেনি সরকার। এই সরকারের আমলেই বাংলাদেশের জনগণকে টাউট বলার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সামনে এক ভারতীয় সাংবাদিক বাংলাদেশকে বাফার স্টেট বলার পর নীরব থেকেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছে গত দুই বছরে। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি। সমুদ্রসীমা নির্ধারণে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় মিয়ানমার তার সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি খারাপ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই দেশটি যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে তাদের অস্বস্তির কথা জানিয়েছে শুরুতেই। তবে বাংলাদেশ সরকারের একটি লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা। দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ওই বৈঠকের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো। তবে ফল হয়েছে তার উল্টো। বৈঠকে ’৭১-এর গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে রীতিমতো বেঁকে বসে পাকিস্তান। ২ দিনের ওই বৈঠক মাত্র ৩ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। পাকিস্তানের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের বৈঠকের যে কর্মসূচি ছিল তা বাতিল করে পাকিস্তান। ওই বৈঠকের পর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক অত্যন্ত নাজুক।
চীনের সঙ্গে একটি বিশেষ সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে কূটনীতিতে ভারসাম্য রক্ষার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল তাও সফল হয়নি। গত বছর জানুয়ারিতে ভারত সফরের পর প্রধানমন্ত্রী মার্চ মাসে চীন সফর করেন। ওই সফরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, সামরিক সহযোগিতাসহ যেসব ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল সেসব ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অগ্রগতি নেই। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীন বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য ঢাকার কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়েছে বেইজিং। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভারতপ্রীতির কারণে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে চীন। সব মিলিয়ে এক আস্থাহীনতার ওপর এসে দাঁড়িয়েছে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক।
সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। মুসলিম বিশ্ব থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে বাংলাদেশ। গত দুই বছরে সৌদি আরবসহ ২৫টি দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। জনশক্তি রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে বর্তমান সরকারের আমলে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নেপাল থেকে শ্রমিক নিলেও বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে না। সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে খোদ সরকার সমর্থক বায়রা নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন।
মানবাধিকার পরিস্থিতি, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমান সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট পশ্চিমা দেশগুলো। তবে প্রকাশ্যে তেমন কোনো সমালোচনা করছে না সরকারের। পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য ভারত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হওয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মুখ খুলছে না পশ্চিমারা। তবে এ অবস্থা কতদিন বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে সম্প্রতি যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে তা স্পষ্ট। কসোভোর স্বীকৃতি, টিফা চক্তি, চীনের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বর্তমান সরকারের অবস্থানে মোটেই সন্তুষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে এটা বিশ্ববাসীকে জানাতে সক্ষম হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দাতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় করাতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দাতারা।
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে ব্যর্থতার পরও সরকার এখন পর্যন্ত পশ্চিমা দেশগুলোকে প্রকাশ্য সমালোচনা করা থেকে বিরত রেখে তাদের সমর্থন ধরে রাখতে পেরেছে। এটাকে সরকার তাদের সাফল্য মনে করতেই পারে।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের সময় বিভিন্ন সরকার প্রধানের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে বসিয়েছেন, তার প্রশংসা করেছেন, দিল্লিতে বিপুল সংবর্ধনা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এই বা কম কি?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন