স্টাফ রিপোর্টার
ক্ষমা চাওয়ার পর আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ১৩ আইনজীবী। একই সঙ্গে তাদের সনদ রক্ষা হলো। তবে নিম্ন আদালতে জামিন না হওয়ায় তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল ইফতারের পর তাদের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ক্ষমা প্রার্থনার পর হাইকোর্ট আইনজীবীদের ক্ষমা করে দেন।
একই সঙ্গে উচ্চ আদালতসহ দেশের যে কোনো আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করে নেন আদালত। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে কারাগারে তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামীকাল নিম্ন আদালতে তাদের জামিন আবেদনের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় দেখার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ আগস্ট বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটার পর পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি সমর্থক ১৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। পরদিন পুলিশকে মারধরের অভিযোগে পুলিশ আরও ৯ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করে। একই ঘটনায় বিএনপি সমর্থক ১৩ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। এছাড়া ১৪ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চ আদালতসহ দেশের যে কোনো আদালতে তাদের আইন পেশ চালিয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গতকাল হাইকোর্টে ১৩ আইনজীবী ক্ষমা প্রার্থনা করে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ন্যায় বিচারের জন্য আদালত ও আইনজীবী উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে। কাজেই আইনজীবী ও আদালতের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। আমরা সবাই মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে চাই। এটা করতে হলে আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়াও জরুরি। আজকে যারা তরুণ আইনজীবী ভবিষ্যতে তারাই খ্যাতিমান আইনজ্ঞ হবেন। গত ২ আগস্টের ঘটনার জন্য তরুণ আইনজীবীরা অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তারা তাদের ওই দিনের ভূমিকা সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য আদালতও সন্তুষ্ট। ফলে আদালত তাদের বিষয়ে ওই দিনের আদেশ নিষ্পত্তি করে দিলেন।
আইনজীবীদের ক্ষমার আবেদন : গতকাল বেলা ২টায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর আদালতে হাজির হয়ে একটি আবেদন পেশ করে বলেন, গত ২ আগস্টের ঘটনায় এই আদালত ১৩ জন আইনজীবীর সনদ বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেছেন। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েছি। সেখানে প্রধান বিচারপতি আমাকেসহ সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়টি সমাঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণেই আমরা আজ আপনার আদালতে এসেছি। তিনি বলেন, ১৩ জন আইনজীবীই বয়সে তরুণ। তারা সবেমাত্র তাদের পেশাজীবন শুরু করেছেন। একদিন হয়তো তাদের ভেতর থেকেই খ্যাতিমান আইনজ্ঞ বেরিয়ে আসবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আর এগুতে চাই না। এখানেই শেষ করতে চাই। ২ আগস্টের ঘটনার বিরণ তুলে ধরে বলেন, ওইদিন দু’পক্ষের তরুণ আইনজীবীরাই বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছিলেন। মাননীয় আদালত, আপনাদের মনে থাকার কথা যে, এ ধরনের ঘটনা আদালতে এটিই প্রথম নয়। এর আগেও এই আদালতে ভাংচুর ও আদালত অঙ্গনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির এজলাস ভাংচুর হয়েছে। আইনের বই ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। আমরা পুরনো সেই ইতিহাসের দিকে যেতে চাই না। এ ঘটনায় আমাদের বারের একজন সিনিয়র সদস্য ও সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে পুলিশ সুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার করে নির্যাতন চালিয়েছে। এখন তিনি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এতসব ঘটনার পরেও আমরা আদালতের মর্যাদা রক্ষার তাগিদেই আজকে আপনার আদালতে ক্ষমা চাইতে এসেছি। খন্দকার মাহবুব হোসেনের এ বক্তব্যের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত ২ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমরা সবাই দুঃখিত। আমরা সবাই আদালতের মান-মর্যাদা রক্ষা করতে চাই। মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমাদেরকে এ বিষয়ে সমঝোতার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই আলোকে আমরা সবাই একত্রে বসে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের পর আদালত নিম্ন আদালত আইনজীবীদের আদালতে হাজির করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মৌখিকভাবে এ আদেশ তাদের কাছে পৌঁছে দেন।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া এমপি ও তৌহিদুল ইসলামকে এবং ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, শহিদুজ্জামান, মির্জা আল মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, এনামুল হোসেন গাফফার, মো. আশরাফুজ্জামান খান, গোলাম নবী, শরীফউদ্দিন আহমেদকে হাইকোর্টে বিকাল ৪টায় হাজির করা হয়। এছাড়া আরেক আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এমইউ আহমেদকে ১১ আগস্ট গ্রেফতারের পর পুলিশি নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও তার জ্ঞান না ফেরায় গতকাল তাকে আদালতে আনা সম্ভব হয়নি বলে আদালতকে অবহিত করা হয়। আদালত ও আইনজীবীদের সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। এ সময় ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীসহ কয়েকশ’ আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সরকারপক্ষে বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। তারা সবাই অতীতের দিকে না ফিরে ভবিষ্যতে যাতে আদালতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে, সেদিকে সবার সুদৃষ্টি রাখা প্রয়োজন বলে অভিমত দেন। আইনজীবী ও বিচারক সবারই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার কথা বলেন তারা। তাদের এ বক্তব্যের পর আদালত আইনজীবীদের অব্যাহতি দেয়ার কথা বলেন। নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আইনজীবীদের পক্ষে পৃথক একটি আবেদন পেশ করে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আদালতে ওইদিনের ঘটনার সাক্ষী বারের শত শত সদস্য। আদালতের ভেতরে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা হৈচৈ করেছেন। বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছেন। অথচ পুলিশ মামলা করেছে আইনজীবীরা নাকি তাদের পেশাগত কাজে বাধা দিয়েছেন। এছাড়াও পুলিশ আরও একটি মামলা করেছে। এ দুটি মামলায় আমাদের বার সদস্য আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। দুটি মামলাতেই জামিনের আবেদন করা হয়েছে। জামিনযোগ্য ধারা হওয়া সত্ত্বেও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন মঞ্জুর করেননি। বার সদস্যদের এভাবে জেলহাজতে পাঠিয়ে দিলে এ বারেরই সম্মান ক্ষুণ্ন হবে। তাছাড়া একজন আইনজীবীকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তিনি এখন মৃত্যুশয্যায়। তার এখনও জ্ঞান ফেরেনি। এ অবস্থায় আমাদের সহকর্মীদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারি না। খন্দকার মাহবুব হোসেনের এ বক্তব্যের পর সরকারপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, এ আদালতের জামিনের আবেদন বিবেচনা করার এখতিয়ার নেই। এখানে জামিন দিলে একটি খারাপ নজির স্থাপন হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের জবাবে আদালত বলেন, তাহলে তাদের নিম্ন আদালতে একটি নতুন আবেদন করে জামিন চাইতে বলা যায় কিনা। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা দু’একদিন জেলে থাকলে এমন কোনো সমস্যা হবে না। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই তাদের জামিন হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, হাইকোর্টের এ আদালতের অনেক ক্ষমতা আছে। আদালত চাইলে যে কোনো আদেশ দিতে পারেন। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। আদালত এ ক্ষেত্রে জামিনের বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারেন। তার এ বক্তব্যের সমর্থনে বার সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, মাননীয় আদালত! আপনার এ আদালত এর আগেও বিশেষ প্রয়োজনে এ ধরনের আদেশ দিয়েছেন। আজও আমরা সে ধরনের একটি আদেশ চাই। তাদের এ বক্তব্যের পর আদালত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ করে বলেন, মি. মওদুদ আপনি কতদিন জেল খেটেছেন। মওদুদ আহমদ বলেন, প্রায় ৬ মাস। আদালত বলেন, তাহলে তাদের দু’একদিনের জেল নিয়ে আপনি এত উদ্বিগ্ন কেন? তাছাড়া পুলিশ তাদের কিছু বলবে না। আপনি দেখছেন তো, আমাদের এ আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সব পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ শেষে আদালত ওই আদেশ দেন। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে কারাবন্দি আইনজীবীদের জামিনের বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন আদালত।
নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ : আদালতে হাতাহাতি ও পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় বিএনপি সমর্থিত ১০ আইনজীবীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে ১০ আইনজীবী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালতে আত্মসমর্পণ করা আইনজীবীরা হলেন—অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, শহিদুজ্জামান, মির্জা আল মাহমুদ, শরীফউদ্দিন আহম্মেদ, মাহমুদ আরেফিন স্বপন, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে মাহবুব, এনামুল হোসেন গাফফার, মোহাম্মদ আলী, মো. আশরাফুজ্জামান খান ও খ্রিস্টান নবী ওরফে গোলাম নবী। ওই আইনজীবীরা দুই মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. শাহাদত হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে তাদের পক্ষে জামিনের প্রার্থনা জানিয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন ও ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান বাদল। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমরা সুপ্রিমকোর্টের এপিলেট ডিভিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করব। সুতরাং জামিন দেয়া হোক। এছাড়া অভিযুক্তরা মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ এনে রাজনৈতিক কারণে এ মামলা দায়ের করেছে। তাদের বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপির আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম, ইকবাল হোসেন, সিরাজ উল্লাহ, নুরুজ্জামান তপন, আবদুল খলেক মিলন, শাহীনা হক বিউটি প্রমুখ আদালতে জামিন চান। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদার বলেন, হাইকোর্ট থেকে সমঝোতা হয়েছে—এ ধরনের লিখিত কোনো কাগজ এ আদালতে আসেনি। তাই আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি।
এদিকে আদালতে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় নিম্ন আদালতে শত শত আইনজীবী তাত্ক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সমাবেশে আইনজীবী নেতারা বলেন, সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বিরোধী দলের ও বিরোধী মতের লোকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আইনজীবীদের নামে এ মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
গতকাল সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ক্ষমা প্রার্থনার পর হাইকোর্ট আইনজীবীদের ক্ষমা করে দেন।
একই সঙ্গে উচ্চ আদালতসহ দেশের যে কোনো আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করে নেন আদালত। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে কারাগারে তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামীকাল নিম্ন আদালতে তাদের জামিন আবেদনের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় দেখার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ আগস্ট বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটার পর পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি সমর্থক ১৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। পরদিন পুলিশকে মারধরের অভিযোগে পুলিশ আরও ৯ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করে। একই ঘটনায় বিএনপি সমর্থক ১৩ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। এছাড়া ১৪ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চ আদালতসহ দেশের যে কোনো আদালতে তাদের আইন পেশ চালিয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গতকাল হাইকোর্টে ১৩ আইনজীবী ক্ষমা প্রার্থনা করে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ন্যায় বিচারের জন্য আদালত ও আইনজীবী উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে। কাজেই আইনজীবী ও আদালতের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। আমরা সবাই মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে চাই। এটা করতে হলে আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়াও জরুরি। আজকে যারা তরুণ আইনজীবী ভবিষ্যতে তারাই খ্যাতিমান আইনজ্ঞ হবেন। গত ২ আগস্টের ঘটনার জন্য তরুণ আইনজীবীরা অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তারা তাদের ওই দিনের ভূমিকা সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য আদালতও সন্তুষ্ট। ফলে আদালত তাদের বিষয়ে ওই দিনের আদেশ নিষ্পত্তি করে দিলেন।
আইনজীবীদের ক্ষমার আবেদন : গতকাল বেলা ২টায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর আদালতে হাজির হয়ে একটি আবেদন পেশ করে বলেন, গত ২ আগস্টের ঘটনায় এই আদালত ১৩ জন আইনজীবীর সনদ বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেছেন। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েছি। সেখানে প্রধান বিচারপতি আমাকেসহ সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়টি সমাঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণেই আমরা আজ আপনার আদালতে এসেছি। তিনি বলেন, ১৩ জন আইনজীবীই বয়সে তরুণ। তারা সবেমাত্র তাদের পেশাজীবন শুরু করেছেন। একদিন হয়তো তাদের ভেতর থেকেই খ্যাতিমান আইনজ্ঞ বেরিয়ে আসবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আর এগুতে চাই না। এখানেই শেষ করতে চাই। ২ আগস্টের ঘটনার বিরণ তুলে ধরে বলেন, ওইদিন দু’পক্ষের তরুণ আইনজীবীরাই বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছিলেন। মাননীয় আদালত, আপনাদের মনে থাকার কথা যে, এ ধরনের ঘটনা আদালতে এটিই প্রথম নয়। এর আগেও এই আদালতে ভাংচুর ও আদালত অঙ্গনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির এজলাস ভাংচুর হয়েছে। আইনের বই ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। আমরা পুরনো সেই ইতিহাসের দিকে যেতে চাই না। এ ঘটনায় আমাদের বারের একজন সিনিয়র সদস্য ও সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে পুলিশ সুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার করে নির্যাতন চালিয়েছে। এখন তিনি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এতসব ঘটনার পরেও আমরা আদালতের মর্যাদা রক্ষার তাগিদেই আজকে আপনার আদালতে ক্ষমা চাইতে এসেছি। খন্দকার মাহবুব হোসেনের এ বক্তব্যের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত ২ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমরা সবাই দুঃখিত। আমরা সবাই আদালতের মান-মর্যাদা রক্ষা করতে চাই। মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমাদেরকে এ বিষয়ে সমঝোতার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই আলোকে আমরা সবাই একত্রে বসে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের পর আদালত নিম্ন আদালত আইনজীবীদের আদালতে হাজির করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মৌখিকভাবে এ আদেশ তাদের কাছে পৌঁছে দেন।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া এমপি ও তৌহিদুল ইসলামকে এবং ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, শহিদুজ্জামান, মির্জা আল মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, এনামুল হোসেন গাফফার, মো. আশরাফুজ্জামান খান, গোলাম নবী, শরীফউদ্দিন আহমেদকে হাইকোর্টে বিকাল ৪টায় হাজির করা হয়। এছাড়া আরেক আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এমইউ আহমেদকে ১১ আগস্ট গ্রেফতারের পর পুলিশি নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও তার জ্ঞান না ফেরায় গতকাল তাকে আদালতে আনা সম্ভব হয়নি বলে আদালতকে অবহিত করা হয়। আদালত ও আইনজীবীদের সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। এ সময় ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীসহ কয়েকশ’ আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সরকারপক্ষে বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। তারা সবাই অতীতের দিকে না ফিরে ভবিষ্যতে যাতে আদালতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে, সেদিকে সবার সুদৃষ্টি রাখা প্রয়োজন বলে অভিমত দেন। আইনজীবী ও বিচারক সবারই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার কথা বলেন তারা। তাদের এ বক্তব্যের পর আদালত আইনজীবীদের অব্যাহতি দেয়ার কথা বলেন। নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আইনজীবীদের পক্ষে পৃথক একটি আবেদন পেশ করে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আদালতে ওইদিনের ঘটনার সাক্ষী বারের শত শত সদস্য। আদালতের ভেতরে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা হৈচৈ করেছেন। বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছেন। অথচ পুলিশ মামলা করেছে আইনজীবীরা নাকি তাদের পেশাগত কাজে বাধা দিয়েছেন। এছাড়াও পুলিশ আরও একটি মামলা করেছে। এ দুটি মামলায় আমাদের বার সদস্য আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। দুটি মামলাতেই জামিনের আবেদন করা হয়েছে। জামিনযোগ্য ধারা হওয়া সত্ত্বেও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন মঞ্জুর করেননি। বার সদস্যদের এভাবে জেলহাজতে পাঠিয়ে দিলে এ বারেরই সম্মান ক্ষুণ্ন হবে। তাছাড়া একজন আইনজীবীকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তিনি এখন মৃত্যুশয্যায়। তার এখনও জ্ঞান ফেরেনি। এ অবস্থায় আমাদের সহকর্মীদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারি না। খন্দকার মাহবুব হোসেনের এ বক্তব্যের পর সরকারপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, এ আদালতের জামিনের আবেদন বিবেচনা করার এখতিয়ার নেই। এখানে জামিন দিলে একটি খারাপ নজির স্থাপন হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের জবাবে আদালত বলেন, তাহলে তাদের নিম্ন আদালতে একটি নতুন আবেদন করে জামিন চাইতে বলা যায় কিনা। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা দু’একদিন জেলে থাকলে এমন কোনো সমস্যা হবে না। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই তাদের জামিন হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, হাইকোর্টের এ আদালতের অনেক ক্ষমতা আছে। আদালত চাইলে যে কোনো আদেশ দিতে পারেন। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। আদালত এ ক্ষেত্রে জামিনের বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারেন। তার এ বক্তব্যের সমর্থনে বার সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, মাননীয় আদালত! আপনার এ আদালত এর আগেও বিশেষ প্রয়োজনে এ ধরনের আদেশ দিয়েছেন। আজও আমরা সে ধরনের একটি আদেশ চাই। তাদের এ বক্তব্যের পর আদালত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ করে বলেন, মি. মওদুদ আপনি কতদিন জেল খেটেছেন। মওদুদ আহমদ বলেন, প্রায় ৬ মাস। আদালত বলেন, তাহলে তাদের দু’একদিনের জেল নিয়ে আপনি এত উদ্বিগ্ন কেন? তাছাড়া পুলিশ তাদের কিছু বলবে না। আপনি দেখছেন তো, আমাদের এ আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সব পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ শেষে আদালত ওই আদেশ দেন। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে কারাবন্দি আইনজীবীদের জামিনের বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন আদালত।
নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ : আদালতে হাতাহাতি ও পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় বিএনপি সমর্থিত ১০ আইনজীবীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে ১০ আইনজীবী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালতে আত্মসমর্পণ করা আইনজীবীরা হলেন—অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, শহিদুজ্জামান, মির্জা আল মাহমুদ, শরীফউদ্দিন আহম্মেদ, মাহমুদ আরেফিন স্বপন, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে মাহবুব, এনামুল হোসেন গাফফার, মোহাম্মদ আলী, মো. আশরাফুজ্জামান খান ও খ্রিস্টান নবী ওরফে গোলাম নবী। ওই আইনজীবীরা দুই মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. শাহাদত হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে তাদের পক্ষে জামিনের প্রার্থনা জানিয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন ও ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান বাদল। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমরা সুপ্রিমকোর্টের এপিলেট ডিভিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করব। সুতরাং জামিন দেয়া হোক। এছাড়া অভিযুক্তরা মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ এনে রাজনৈতিক কারণে এ মামলা দায়ের করেছে। তাদের বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপির আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম, ইকবাল হোসেন, সিরাজ উল্লাহ, নুরুজ্জামান তপন, আবদুল খলেক মিলন, শাহীনা হক বিউটি প্রমুখ আদালতে জামিন চান। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদার বলেন, হাইকোর্ট থেকে সমঝোতা হয়েছে—এ ধরনের লিখিত কোনো কাগজ এ আদালতে আসেনি। তাই আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি।
এদিকে আদালতে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় নিম্ন আদালতে শত শত আইনজীবী তাত্ক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সমাবেশে আইনজীবী নেতারা বলেন, সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বিরোধী দলের ও বিরোধী মতের লোকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আইনজীবীদের নামে এ মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন