পুলিশের নির্যাতনে অজ্ঞান হওয়া আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমইউ আহমদের অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত। গত ৩ দিনেও তার জ্ঞান ফেরাতে পারছেন না ডাক্তাররা। তারা বলেছিলেন, প্রকৃত অবস্থা ৭২ ঘণ্টা পর বলা যাবে। এরই মধ্যে ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বরং কিছুটা অবনতি হয়েছে।
গত বুধবার গভীর রাতে ডিবি পুলিশ এমইউ আহমদকে সেগুন বাগিচার বাসা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের পর রাতে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি অফিসে। সেখানে নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ডিবি ভোর রাতে তাকে নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা অবস্থা দেখে চিকিত্সার জন্য রাখেননি। তারা হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশকে। ভোরেই তাকে ডিবি নিয়ে যায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে তাকে গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছেন ডাক্তাররা। তারপরও জ্ঞান ফিরছে না। অজ্ঞান অবস্থায়ই আছেন গত ৩ দিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন ডাক্তার জানান, তাকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গে সূক্ষ্মভাবে আঘাত করা হয়েছে। যে কারণে দ্রুত অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। একই সঙ্গে তিনি মেসিভ হার্ট অ্যাটাক করেছেন। তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ডাক্তাররা।
গত ২ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে বিচারপতি এক মামলায় আদেশ দেয়ার সময় অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিরোধীদলীয় নেতার দেশপ্রেম নিয়ে কটাক্ষ করায় প্রতিবাদ করেন উপস্থিত আইনজীবীরা। আদালতে উপস্থিত সরকার সমর্থক আইনজীবী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতরের আইনজীবীরা সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদী আইনজীবীদের ওপর চড়াও হয়। এ নিয়ে দুই দল আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতি হয় আদালত কক্ষে। এই ঘটনা নিয়ে সেদিনই পুলিশ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় অভিযোগ করা হয় আদালতে ডিবি পুলিশের কাজে বাধা দেয়া হয়েছে। এই মামলায় ১৪ আইনজীবীকে আসামি করা হয়। আসামিদের তালিকায় এমইউ আহমদের নামও রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে একটি সমঝোতা প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয় এমইউ আহমদকে। গ্রেফতারের পর তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন